Friday, April 19, 2019

গনিতের সূত্র

উত্তর
বীজ গনিত ও এিকোণমিতির সুএ:
(1) (a + b)² = a² + 2ab + b²
(2) (a + b)² = (a – b)² + 4ab
3) (a – b)² = a² – 2ab + b²
4) (a – b)² = (a + b)² – 4ab
5) a² + b² = (a + b)² – 2ab
6) a² + b² = (a – b)² + 2ab
7) a² – b² =(a + b)(a – b)
8) 2(α² + в²) = (a + в)² + (a – в)²
9) 4ab = (a + b)² -(a – b)²
10) ab = {(a + b)/2}² – {(a – b)/2}²
11) (a + b + c)² = a² + b² + c² + 2(ab + bc + ca)
12) (a + b)³ = a³ + 3a²b + 3ab² + b³
13) (a + b)³ = a³ + b³ + 3ab (a + b)
14) (a – b)³= a³ – 3a²b + 3ab² – b³
15) a³ + b³ = (a + b) (a² – ab + b²)
16) a³ + b³ = (a + b)³ – 3ab (a + b)
17) a³ -b³ = (a – b) (a² + ab + b²)
(18) a³ – b³ = (a – b)³ + 3ab (a – b)

( 19) (a + b + c)² = a² + b² + c² + 2(ab + bc + ca)
  1. Sin(A + B) = sinA.cosB + cisA.sinB
  2. sin(A - B) = sinA.cosB - cisA.sinB
  3. cos(A + B) = cosA.cosB - sinA.sinB
  4. cos(A - B) = cosA.cosB + sinA.sinB
  5. tan(A + B) = tanA + tanB1 - tanA.tanB
  6. tan(A - B) = tanA - tanB1 + tanA.tanB
  7. cot(A + B) = cotA.cotB - 1cotA + cotB
  8. cot(A - B) = cotA.cotB + 1cotB - cotA
  9. sin(A + B).sin(A - B) = sin2A - sin2B = cos2B - cos2A
  10. cos(A + B).cos(A - B) = cos2A - sin2B = cos2B - sin2A

শূন্য সংখ্যার আবিষ্কারের ইতিহাস

প্রাচীন মিশরসম্পাদনা

প্রাচীন মিশরীয় সংখ্যাগুলো ছিল দশ ভিত্তিক। তাদের সংখ্যাগুলো স্থানভিত্তিক না হয়ে চিত্র ভিত্তিক ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ১৭৪০ সালের দিকে মিশরিয়রা আয়কর ও হিসাবরক্ষণের জন্য শূন্যের ব্যবহার করত। তাদের চিত্রলিপিতে একটি প্রতীক ছিল যাকে "নেফর" বলা হতো, যার অর্থ হল "সুন্দর"। এই প্রতীকটি তাঁরা শূন্য এবং দশকের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করত। প্রাচীন মিশরীয় পিরামিড ও অন্যান্য স্থাপনায় এধরনের সংখ্যার ব্যবহার পাওয়া যায়।[৭]

মেসোপটেমীয় সভ্যতাসম্পাদনা

খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মাঝামাঝি সময়ে ব্যাবিলনীয় গণিতবিদরা ছয়ভিত্তিক সংখ্যা ব্যবস্থার প্রবর্তন ও উন্নয়ন করে। শূন্য সংখ্যাটির অভাব তারা ছয়ভিত্তিক সংখ্যার মধ্যে একটি খালি ঘর রেখে পূরণ করত। খৃষ্টপূর্ব ৩০০ অব্দের দিকে দুটি যতিচিহ্ন প্রতীক এই ফাঁকা যায়গা দখল করে নেয়। প্রাচীন মেসোপটেমীয় শহর সুমের থেকে প্রাপ্ত একত্ব শিলা লিপি থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে প্রাচীন লেখক বেল বেন আপ্লু তার লেখায় দুটি যতিচিহ্ন প্রতীক ব্যবহারের বদলে একই "হুক" দিয়ে শূন্যকে প্রকাশ করেছেন।[৮]
ব্যাবিলনীয় শূন্যটি প্রকৃতপক্ষে শূন্য হিসেবে গন্য করা সমীচীন হবে না কারণ এই প্রতীকটিকে স্বাধীনভাবে লিখা সম্ভব ছিল না কিংবা এটি কোন সংখ্যার পিছনে বসে কোন দুই অঙ্ক বিশিষ্ট অর্থবোধক সংখ্যা প্রকাশ করত না।

ভারতসম্পাদনা

শূন্যকে (শ্যূন্য) কোন সংকেত বা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না-করে সরাসরি সংখ্যা হিসেবে সফলভাবে ব্যবহারের অবিমিশ্র কৃতিত্ব প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদদের। খৃষ্টপূর্ব নবম শতাব্দীর দিকে ভারতে বাস্তব সংখ্যা দ্বারা হিসাব নিকাশ করার সময় শ্যূন্য ব্যবহৃত হত। এমনকি শ্যূন্যকে ব্যবহার করে যোগ, বিয়োগ, গুন ও ভাগও করা হত।[৯][১০]খৃষ্টপূর্ব পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় শতকের মধ্যে ভারতীয় গণিতবিদ পিঙ্গলা "বাইনারি সংখ্যা" দিয়ে হিসাব-নিকাশ করার পদ্ধতি বের করেন। তিনি একটি ছোট অক্ষর এবং একটি বড় অক্ষরের সমন্বয়ে তা করতেন যা আধুনিক কালের মোর্স কোডের মত।[১১][১২] তাঁর সমসাময়িক গণিতবিদরা সংস্কৃত শব্দ শ্যূন্যেয়া থেকে বাংলা শূন্য শব্দটি গ্রহণ করেন।
ভারতীয় উপমহাদেশের গণিতবিদ আর্যভট্টের একটি বই-এ পাওয়া যায়, স্থানম স্থানম দশ গুণম।এখানে হয়তবা তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন, স্থানে স্থানে দশ গুণের কথা। তবে এখানেও শুন্যের কথা লুকায়িত ছিল। শেষ পর্যন্ত শুন্যকে সংখ্যার পরিচয় দেন ব্রহ্মগুপ্ত। তার ব্রহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত নামক বই-এ প্রথম শুন্যকে সংখ্যা হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়। শূন্যের সাথে যোগ , বিয়োগ , গুণের কথা এই বই-এ সঠিকভাবে দেয়া হয়। এছাড়া মহাবীর এবং ভাস্কর শুন্য নিয়ে কাজ করেন। তবে দুঃখের বিষয় এদের কেউ শুন্য দিয়ে কোন কিছু ভাগের কথা উল্লেখ করেনি।

শূন্য সংখ্যার উৎপত্তি

ইংরেজিতে জিরো (ইং: zero) শব্দটি এসেছে ভেনিশিয় শব্দ জিরো (zero) থেকে যা আবার ইতালিয় জিফাইরো (zefiro জেফিরো) থেকে পরিবর্তিত হয়ে এসেছিল। ইতালীয় জিফাইরো শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ "সাফাইর" বা "সাফাইরা" (صفر) থেকে যার অর্থ "সেখানে কিছু ছিল না"। এই শব্দটি প্রথমে ভারতীয় সংস্কৃত হতে অনুদিত হয়েছে।সংস্কৃত শব্দ শ্যুন্যেয়া (শ্যূন্য) যার অর্থ খালি বা ফাঁকা। ইংরেজি শব্দ জিরোর প্রথম ব্যবহার পাওয়া যায় ১৫৯৮ খ্রিস্টাব্দে।[২][৩][৪][৫]
৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের মুসলিম বিজ্ঞানি মোহাম্মদ ইবন আহমাদ আল-খাওয়ারিজমি তাঁর বিজ্ঞানগ্রন্থ "বিজ্ঞানের চাবি"-তে বলেন, 
সেই ছোট বৃত্তকে তিনি সিফার (صفر) নামে অবিহিত করেন। তার উল্লিখিত এই সিফারই বর্তমান যুগের জিরো বা শূন্য।[৬]

আইজ্যাক নিউটন সম্পর্কে ১৮ টি অবাক করা তথ্য

মধ্যাকর্ষণ শক্তির কথা আসলেই সবার আগে যে নামটি মনে পড়ে, তিনি হলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন। শিক্ষিত মানুষ মাত্রই আইজ্যাক নিউটনের নাম শুনেছে। তিনি একাধারে পদার্থবিদ, রসায়নবিদ, দার্শনিক, জ্যোতির্বিদ, ধর্মতত্ত্ববিদ, গণিতবিদ ও অর্থনীতিবিদ ছিলেন! নিউটনের জীবনকাহিনী খুবই ঘটনাবহুল, অদ্ভুত এবং রহস্যময়। এই মহান বিজ্ঞানীর জীবনের কিছু মজার গল্প তুলে ধরছি পাঠকদের উদ্দেশ্যে।
* স্যার আইজ্যাক নিউটনের জন্মতারিখ নিয়ে একটা মজার কনফিউশন আছে। তার জন্মতারিখ গণনা করা হয় ৪ই জানুয়ারি ১৬৪৩ সালে। তিনি জন্মেছিলেন বড়দিনে। কিন্তু, বড়দিন তো ২৫ ডিসেম্বর। তাহলে! রহস্যটা হলো, তার জন্মের সময় (১৬৪৩ সালে) ইংল্যান্ডে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে সাল গণনা করা হতো। তখনো গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু হয়নি। জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে নিউটনের জন্ম ২৫ ডিসেম্বর। যখন থেকে (১৭৫২ সাল) ইংল্যান্ডে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু হয়, তখন থেকে এর সাথে মিলিয়ে ১১ দিন পিছিয়ে নিউটনের জন্মতারিখের হিসেব করা হয় ৪ জানুয়ারি।
* নির্দিষ্ট সময়ের ১০-১২ সপ্তাহ আগে জন্মেছিলেন বলে নিউটন জন্মের সময় খুব দুর্বল ও শীর্ণকায় ছিলেন। তিনি বাঁচবেন, সেটাই ছিল দুরূহ আশা। তিনি জন্মের সময় কতটা ছোট ছিলেন, এ বর্ণনা দিতে গিয়ে তাঁর মা বলেছিলেন, এক কোয়ার্টার কাপের মধ্যে নিউটনকে রাখা যেত! সৃষ্টিকর্তার তাকে নিয়ে অনেক বড় পরিকল্পনা ছিল বলেই হয়তো সে যাত্রায় তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।
* মজার ব্যাপার হলো, আইজ্যাক নিউটনের বাবার নামও ছিল আইজ্যাক নিউটন!
* নিউটন ব্যক্তিজীবনে খুব নিঃসঙ্গ ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি সহজেই মানুষের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তেন। কোনো কোনো ইতিহাসবিদের মতে, তিনি অটিস্টিক ছিলেন অথবা তার মধ্যে দ্বৈত সত্ত্বা (Bipolar Disorder) কাজ করতো। কোনটি নিশ্চিতভাবে সত্য, সেটি জানার তো আর অবকাশ নেই! 
* নিউটন তোতলা ছিলেন। কথা বলার সময় তিনি আটকে যেতেন। বিখ্যাত মানুষদের মধ্যে এ্যারিস্টোটল, উইনস্টন চার্চিল, চার্লস ডারউইন প্রমুখ ব্যক্তিবর্গেরও এই সমস্যা ছিল।ভীষণ বদমেজাজী আর জেদী ছিলেন আইজ্যাক নিউটন। তিনি নিজের সব কাজের তালিকা তৈরি করতে পছন্দ করতেন। তার তৈরি একটি তালিকায় ১৯ বছর পর্যন্ত করা ৪৮টি অপরাধের স্বীকারোক্তি ছিল। এর তালিকায় ছিল তার মা এবং সৎ বাবাকে বাড়িসহ জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার হুমকি, বোনকে ঘুষি মারা, মা ও বোনের সাথে খিটিমিটি, এরকম আরও অনেক কিছু্!
* স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন নিউটন ছাত্র হিসেবে খুবই অমনোযোগী ছিলেন। কিন্তু সে সময়ে তিনি একটি সূর্যঘড়ি, পানি দ্বারা চালিত একটি ঘড়ি, যান্ত্রিক ঘোড়ার গাড়ি, এমন আরও অনেক কিছু তৈরি করেছিলেন যেগুলো ছিল তার প্রতিভার প্রথম প্রকাশ।
* কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নিউটন সাইজার (Sizer) এবং ওয়েটার হিসেবে কাজ করতেন। সাইজার বলতে সেইসব ছাত্রদের বোঝায় যারা অন্য ছাত্রদের ফুটফরমায়েশ খাটার বিনিময়ে সামান্য কিছু আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকে।
* নিউটনের মাথায় আপেল পড়ার যে ঘটনাটি বহুলভাবে প্রচলিত আছে সেরকম কোনো ঘটনা কখনো ঘটেইনি বলে ইতিহাসবিদদের ধারণা। অন্ততপক্ষে, যেভাবে ঘটনাটি প্রচলিত আছে সেভাবে তো নয়ই। নিউটনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, তিনি যখন লাইব্রেরির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলেন, তখন একটি গাছ থেকে আপেল পড়তে দেখে মধ্যাকর্ষণের চিন্তা তাঁর মাথায় আসে।
* নিউটনের ল্যাবরেটরিতে একবার আগুন লেগে তার ২০ বছরের গবেষণার কাজ নষ্ট হয়ে যায়। আগুন লাগার কারণ হিসেবে তিনি তার পোষা কুকুরকে দায়ী করেন। কিন্তু, বাস্তবে তার পোষা কুকুর ছিল এরকম কোন প্রমাণ ইতিহাসবিদরা পাননি। তাদের ধারণা ল্যাবরেটরির খোলা জানালা দিয়ে আসা দমকা বাতাসে মোমবাতি উল্টে সেখানে আগুন লেগে থাকতে পারে, নিউটনের কখনোই কোন কুকুর ছিল না। ‍তারপরও কুকুরের কাহিনীটিই যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে রয়ে গেছে।* জীবনের একপর্যায়ে নিউটন রাজনীতিক হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ১৬৮৯ সালে এক বছরের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিজ্ঞানী হিসেবে পৃথিবী জোড়া সুখ্যাতি অর্জন করলেও রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি খুব একটা ভাল ছিলেন না। প্রচলিত আছে, তিনি এক বছর পার্লামেন্টের সদস্য থাকাকালে মাত্র একবার কথা বলেছিলেন। সেটিও আবার একজনকে স্রেফ জানালা লাগানোর জন্য!
* নিউটন অবিবাহিত ছিলেন। তিনি চিরকুমার ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। কোন নারীর সাথে তার প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল এরকম কোন প্রমাণও কখনও পাওয়া যায়নি।
* বিজ্ঞানী হয়েও তিনি ছিলেন ধর্মানুরাগী। তার মতে,আবার ধর্মানুরাগী হয়েও নিউটন গোঁড়া ছিলেন না। তিনি বাইবেলের গ্রন্থগত ভুলের সমালোচনা করে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। শুধুমাত্র, বাইবেল ভালোমত বোঝার জন্য তিনি হিব্রু ভাষা শিখেছিলেন। তিনি তার জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় বিজ্ঞানচর্চা বাদ দিয়ে বাইবেলের মর্মার্থ খুঁজে বের করার কাজে ব্যয় করেন। অদ্ভুত হলো, খুব ধার্মিক হওয়া সত্ত্বেও তিনি ভূত, প্রেতাত্মা, শয়তান এসবে বিশ্বাস করতেন না।
* জীবনের শেষভাগে এসে নিউটন দু’বার মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তার অদ্ভুত আচরণের কারণে সাড়া ফেলেছিলেন। মানসিক অসুস্থতার জন্য তিনি নিজে তার ঘুমের অভাবকে দায়ী করেছিলেন। কিন্তু ইতিহাসবিদদের ধারণা, অ্যালকেমি চর্চার কারণে রাসায়নিক বিষক্রিয়া এবং দীর্ঘকালীন বিষণ্ণতা তার অসুস্থতার কারণ ছিল।
* নিউটন মারা গিয়েছিলেন ১৭২৭ সালের ২০ মার্চ যেটা বর্তমানে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে গণনা করা হয় ৩১ মার্চ। তাকে সমাধিস্থ করা হয় ওয়েস্ট মিনিস্টার অ্যাবেতে। তিনিই প্রথম বিজ্ঞানী যাকে এই সন্মানে ভূষিত করা হয়।
* তাঁর মৃত্যুর প্রায় এক শতাব্দী পর ১৮১৬সালে তার একটি দাঁত নিলামে বিক্রি হয় ৩৬০০ ডলারে। আজকের দুনিয়ায় যার মূল্যমান হত ৩৫০০০ ডলার। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে এটিই এ পর্যন্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে দামী দাঁত!
বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের বৈজ্ঞানিক অর্জন ও সফলতার গল্প সর্বজনবিদিত। এখানে তার ব্যক্তি জীবনের যেসব ঘটনা তুলে ধরা হলো, সেগুলোও হয়তো অনেকেরই জানা। তারপরও এরকম মহান মানুষদের জীবন নিয়ে আলোচনা সবসময়ই আনন্দদায়ক!
স্যার আইজ্যাক নিউটন, নিউটন, অবাক করা তথ্য
* নিউটন সম্পর্কে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় সম্ভবত এটি-  Alchemy বা অপরসায়ন শাস্ত্রের প্রতি তার ভীষণ অনুরাগ ছিল! বিভিন্ন ধাতুকে কি করে সোনায় রুপান্তর করা যায়, তা এ শাস্ত্রের আলোচ্য বিষয়। নিউটন এ বিষয়ে ১৬৯টি বই ‍লিখেছিলেন। কিন্তু তার জীবদ্দশায় এর কোনোটিই প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। কেননা, সে সময়ের আইন অনুযায়ী সোনা ও রুপা তৈরি করা গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য হতো। নিউটনের জীবনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল পরশ পাথর বা Philosopher’s Stone এর সন্ধান করা, যেটা দ্বারা সব ধাতুকে সোনায় রুপান্তরিত করা যাবে।
  1. * নিউটন ইংল্যান্ডের রাজকোষাগারের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সেসময় তিনি ব্রিটিশ পাউন্ডের মানদন্ড হিসেবে রুপার পরিবর্তে সোনা ব্যবহারের প্রচলন করেন, যেটা পৃথিবীতে মুদ্রার ইতিহাসে আমূল পরিবর্তন বয়ে আনে।

আইজ্যাক নিউটনের জীবনী

আধুনিক বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৬৪৩খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা জানুয়ারিতে আইজাক নিউটন জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মস্থান লিংকনশায়ারের উল্‌সথর্প ম্যানরে। ম্যানর অঞ্চলটি উল্‌সথর্প-বাই-কোল্‌স্টারওয়ার্থের মধ্যে অবস্থিত। নিউটনের যখন জন্ম হয় তখনও ইংল্যান্ডে সমসাময়িককালের আধুনিকতম প্যাপাল বর্ষপঞ্জির ব্যবহার শুরু হয়নি। তাই তার জন্মের তারিখ নিবন্ধন করা হয়েছিল ১৬৪২ সনের ক্রিস্‌মাস দিবস হিসেবে। তিনি তার পিতা আইজাকের মৃত্যুর তিন মাস পর জন্ম নেন। তার বাবা গ্রামের একজন সাধারণ কৃষক ছিলেন। জন্মের সময় নিউটনের আকার-আকৃতি ছিল খুবই ছোট। তার মা হানাহ্‌ এইসকফ প্রায়ই বলতেন ছোট্টবেলার সেই নিউটনকে অনায়াসে একটি কোয়ার্ট মগের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়া যেতো। তার তিন বছর বয়সে তার মা আরেকটি বিয়ে করেন এবং নতুন স্বামী রেভারেন্ড বার্নাবাউস স্মিথের সাথে বসবাস করতে থাকেন। এসময় নিউটন তার মায়ের সাথে ছিলেন না। নানী মার্গারি এইসকফের তত্ত্বাবধানে তার দিন কাটতে থাকে। নিটটন তার সৎ বাবাকে পছন্দ করতে পারেননি। তার মা এই লোককে বিয়ে করেছে বলে মায়ের প্রতি তার কিছুটা ক্ষোভও ছিল। নিটটন তার ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত করা পাপ কাজগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছিলেন। সেই তালিকা থেকে মায়ের প্রতি তার এই ক্ষোভের প্রমাণ পাওয়া যায়। তালিকায় লিখা ছিল:: "আমার বাবা ও মা-কে এই বলে ভয় দেখানো যে আমি তাদের থাকবার ঘর জ্বালিয়ে দেবো"।
নিউটনের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয় বাড়ির পাশের এক ক্ষুদ্রায়তন স্কুলে। ১২ বছর বয়সে তাকে গ্রান্থামের ব্যাকরণ স্কুলে পড়াশোনার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে তিনি এক ঔষধ প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতার বাড়িতে থাকতেন। এই স্কুলে নিউটন ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্ব্বি যা থেকে তার মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। প্রথমদিকে তার সাথে কেউ না পরলেও এক সময় আরেকটি ছেলে তার সাথে ভালো প্রতিযোগিতা করতে সমর্থ হয়েছিল। স্কুল জীবনের প্রথম থেকেই নিউটনের সবচেয়ে বেশী ঝোঁক ছিল বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র তৈরির প্রতি। সেই বয়সেই তিনি উইন্ডমিল, জল-ঘড়ি, ঘুড়ি এবং সান-ডায়াল তৈরি করেছিলেন। এছাড়া তার গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ ছিল একটি চার চাকার বাহন যা আরোহী নিজেই টেনে চালাতে পারতেন। ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে নিউটনের সৎ বাবা মারা যান। এরপর তার মা উল্‌সথর্পে ফিরে এসে তাকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। উদ্দেশ্য ছিল বাড়িতে ক্ষেত-খামারের কাজ শিখিয়ে ভবিষ্যতের বন্দোবস্ত করে দেয়া। কিন্তু সত্বরই তিনি বুঝতে পারেন যে, খামারের কাজের দিকে নিউটনর কোন ঝোঁক নেই। নিউটনের চাচা ছিলেন বার্টন কগলিসের রেক্টর। এই চাচার উপদেশ শুনেই পরিবার থেকে তাকে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনার জন্য পাঠানো হয়।

গনিতের ইতিহাস

গ্যালিলিও জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করেন এবং তাত্ত্বিক বলবিজ্ঞানের গাণিতিক কাঠামো দাঁড় করান। রনে দেকার্ত বিশ্লেষণী জ্যামিতি উদ্ভাবন করেন; স্থানাংক ব্যবস্থা ও সমীকরণের মাধ্যমে জ্যামিতিক চিত্রাবলীর বর্ণনা দেন তিনি। পিয়ের দ্য ফের্মা সংখ্যাতত্ত্বের ওপর কাজ করেন। ব্লেজ পাসকাল অভিক্ষেপী জ্যামিতির ওপর কাজ করেন। তাঁরা দুজনে মিলে সম্ভাবনা তত্ত্বের আদি পর্যায়ের গবেষণাগুলো শুরু করেন।
১৬৩৯ সালে ফরাসি প্রকৌশলী জেরার দেজার্গ অভিক্ষেপী জ্যামিতি উদ্ভাবন করেন। দেকার্ত ও পাসকাল এই আবিষ্কারের প্রশংসা করেন। কিন্তু অপরিচিত পরিভাষার ব্যবহার এবং দেকার্তের বিশ্লেষণী জ্যামিতি সংক্রান্ত গবেষণার জোয়ারে অভিক্ষেপী জ্যামিতির উন্নয়ন ১৯শ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত পিছিয়ে যায়।
ফের্মা ফাংশনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান এবং বক্ররেখার স্পর্শকের ওপর তত্ত্ব দেন। দিয়োফান্তুসের Arithmetica বইটির পড়ার সময় ফের্মা তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যাতাত্ত্বিক অনুমানটি প্রকাশ করেন। তিনি বইটির মার্জিনে লেখেন n>2 হলে ধনাত্মক সংখ্যা a, b, এবং c-এর জন্য {\displaystyle a^{n}+b^{n}=c^{n};a,b,c,n\in \mathbb {N} }সমীকরণের কোন সমাধান হয় না। কিন্তু তিনি আরও লেখেন যে বইয়ের মার্জিনটিতে তাঁর প্রমাণের জন্য যথেষ্ট স্থান নেই। এই অনুমানটি ফের্মার শেষ উপপাদ্য নামে পরিচিত। এটি বীজগণিত ও সংখ্যাতত্ত্বে বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্ম দেয় এবং ১৯৯৪ সালে এসে এটি প্রমাণিত হয়।
পাসকাল ও ফের্মা জুয়াখেলার একটি সমস্যার উপর ১৬৫৪ সালে পত্র আদানপ্রদান করতে গিয়ে সম্ভাবনার গাণিতিক গবেষণা আরম্ভ করেন। সমস্যাটি ছিল এরকম: যদি দুইজন জুয়ার খেলায় জেতার জন্য প্রয়োজনীয় n পয়েন্ট পাবার আগেই যদি জুয়ার টেবিল থেকে উঠে যেতে চায়, তবে তাদের দুইজনের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা কীভাবে হবে। সমস্ত সম্ভাব্য ফলাফল এবং সংশ্লিষ্ট জেতা জিনিসের পরিমাণ গণনা করে সমস্যাটির সমাধান সম্ভব। পাসকাল দুইজন খেলোয়াড়ের জন্য সমস্যাটির সমাধান করেন। কিন্তু তিন বা তার বেশি খেলোয়াড়ের জন্য সমাধান বের করা তখন সম্ভব হয়নি। এছাড়া পাসকাল তাঁর বাবাকে কর আদায়ের সুবিধার জন্য একটি যান্ত্রিক গণনাযন্ত্র বা ক্যালকুলেটর তৈরি করে দেন। 
পাসকাল স্পর্শকভারকেন্দ্র, উদস্থিতিবিজ্ঞানের ওপর কাজ করেন ও গাণিতিক আরোহী পদ্ধতি আবিষ্কার করেন (পাস্কালের ত্রিভুজ দেখুন)। আইজাক নিউটন ও গটফ্রিড লাইবনিৎস ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেন। গণিতবিদেরা স্বচ্ছন্দে তাদের গবেষণায় অসীমের ব্যবহার শুরু করেন। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে গণিতের স্থান পাকাপোক্ত হয়।

Newton-Raphson Method